পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মুল বিষয় হলো পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়? তা সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা পাস্তুরিত দুধের উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, কাকে বলে এবং কিভাবে এটি প্রস্তুত করা হয় তা সম্পর্কেও জানবো। আশা করি শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন।

পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?

তাহলে দেরি না করে চলুন জেনে নেই পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়? সম্পর্কে।

পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?

হ্যাঁ, পাস্তুরিত দুধ সরাসরি খাওয়া যায়। পাস্তুরাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুধকে প্রথমে গরম করা হয় এবং পরে ঠান্ডা করা হয়। এর ফলে দুধের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর জীবানু এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়।

আমরা বিভিন্ন খাবারের সাথে পাস্তুরিত দুধ খেয়ে থাকি। আমরা প্রাতঃরাশের সাথে পাস্তুরিত দুধ খেতে পারি। আমরা পূর্বে জেনেছি পাস্তুরিত দুধ হলো পুষ্টিকর এবং জীবানুমুক্ত দুধ। যার কারনে এটি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হয়ে থাকে। 

সকালে আমরা কর্ণ ফ্লেক্স এর সাথে পাস্তুরিত দুধ মিশিয়ে খেতে পারি। এছাড়াও ওটমিল বা পাউরুটির সাথে মিশিয়েও খেতে পারি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি খাবার যেমন- পায়েস, মিষ্টি বা লাডু, হালুয়া ইত্যাদির সাথে পাস্তুরিত দুধ মিশিয়ে খাওয়া যায়। 

মিষ্টিজাতীয় খাবারের সাথে পাস্তুরিত দুধ মিশিয়ে খেলে তা আমাদের শরীরের জন্য একদিকে যেমন পুষ্টিকর অন্যদিকে তা আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ হয়ে থাকে। এই কারনে পাস্তুরিত দুধ আমরা সরাসরি খেয়ে থাকি। 

দুধকে পাস্তুরাইজেশন এর ফলে দুধের মধ্যে থাকা সকল ধরনের জীবানু এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। যার কারনে এই দুধ খেলে আমাদের কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দেয় না। পাস্তুরিত দুধের মধ্যে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সঠিক পরিমানে থাকে। 

যার কারনে এই দুধ খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। দোকান থেকে আমরা যখন প্যাকেটজাত পাস্তুরিত দুধ কিনে থাকি ঐ অবস্থাতেই আমরা সরাসরি দুধ খেতে পারি। তবে অনেকেই আছে যারা দুধ গরম করে খেতে পছন্দ করে। তারা চাইলে হালকা গরম করে এই দুধ খেতে পারেন। 

পাস্তুরিত দুধ কেনার সময় প্যাকেটের মেয়াদ এবং উৎপাদনের তারিখ দেখে কেনা উচিত। যদি পাস্তুরিত দুধের প্যাকেট কোনো কারনে ছিদ্র বা ফুটা থাকে তাহলে তা না কেনাই ভালো। পাস্তুরিত দুধ ঠান্ডা অবস্থাতেও সরাসরি খাওয়া যায়। 

পাস্তুরিত দুধ ঢালার জন্য পরিস্কার পাত্র ব্যবহার করা উত্তম। যদি আমরা ফ্রিজ থেকে এই দুধ বের করি তাহলে সাথে সাথে না খাওয়া  উত্তম। কারন সাথে সাথে খেলে আমাদের গলা ব্যথা বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই দুধ সেবনের ক্ষেত্রে দুধের সাথে চিনি বা মধু যোগ করা উত্তম।

পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। খালি পেটে পাস্তুরিত দুধ খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। কারন এতে আমাদের হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় আমরা মশলাদার খাবার খেয়ে থাকি। এই ধরনের খাবার খাওয়ার পরে আমাদের পাস্তুরিত দুধ খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। 

অনেক সময় আমরা টক জাতীয় খাবারের সাথে পাস্তুরিত দুধ খেয়ে থাকি। এটা মোটেও আমাদের শরীরের জন্য ভালো না। কারন টক জাতীয় খাবারের সাথে পাস্তুরিত দুধ খেলে তা আমাদের পাকস্থলীতে জমাট বেধে গ্যাস বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

এই দুধ আমাদের শরীরের কোনো ধরনের ক্ষতি করে না। যার কারনে পাস্তুরিত দুধ খাওয়া নিরাপদ। তবে পাস্তুরিত করার সময় মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত পরিমানে তাপ যেন না দেয়া হয়। এতে দুধের সব গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়।
 
পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। সব ধরনের পাস্তুরিত দুধ বিশুদ্ধ হয় না। কিছু কিছু পাস্তুরিত দুধের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই প্যাকেটজাত পাস্তুরিত দুধকে আপনি কিনে নিয়ে এসে পুনরায় তাপ দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
 
পাস্তুরিত দুধের প্যাকেজিং সঠিক অবস্থায় আছে কি না তা দেখে কিনুন। কারন অনেক সময় খারাপ প্যাকেজিং এর কারনে দুধ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার পাস্তুরিত দুধকে যদি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা না হয়। সেক্ষেত্রে দুধ নষ্ট হয়ে যায়।
 
পাস্তুরিত দুধের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা লক্ষ্য করা যায়। পাস্তুরাইজেশন এর ফলে দুধে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং জীবানু নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে এই দুধ আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ হয়ে থাকে। পাস্তুরিত দুধের মধ্যে পুষ্টি গুনাগুন সঠিক পরিমানে থাকে। এই দুধ খেতে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।

পাস্তুরিত দুধের উপকারিতা

পূর্বে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়? সম্পর্কে জেনেছি। যেখানে বলা হয়েছিল, পাস্তুরিত দুধ আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। পাস্তুরিত দুধে কোনো ধরনের জীবানু বা ব্যাকটেরিয়া থাকে না। যার ফলে আমরা নিশ্চিন্তে পাস্তুরিত দুধ সেবন করতে পারি। নিম্নে পাস্তুরিত দুধের বিভিন্ন উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।

যে দুধ একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গরম করে তারপর তা ঠান্ডা করে প্যাকেটজাত করে খাওয়া হয় তাকে পাস্তুরিত দুধ বলে। এই ধরনের দুধে অনেক বেশি পুষ্টিগুন বজায় থাকে। যা আমাদের শরীরে জন্য উপকারী। 

পাস্তুরিত দুধে সালমোনেলা, ই-কোলাই এবং লিস্টোরিয়া নামক ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া থাকে না। এর পরিবর্তে পাস্তুরিত দুধে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি ১২, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ফসফরাস থাকে। 

এই ধরনের পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। পাস্তুরিত দুধে অনেক বেশি পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি উপস্থিত থাকে। এই দুধ খেলে আমাদের হাড় শক্তিশালী হয় এবং সেই সাথে অস্টিওপেরোসিস নামক অসুখ হওয়া থেকে রক্ষা করে।

পাস্তুরিত দুধ পান করলে আমাদের শরীরে টিবি, ব্রুসেলোসিস এবং রোগের ঝুকি কম থাকে। পাস্তুরিত দুধ খুব সহজে নষ্ট হয় না। যার কারনে এই দুধ দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা সম্ভব হয়। পাস্তুরিত দুধে থাকা প্রোটিন এবং ভিটামিন আমাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। 

পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
 
  • পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমন থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে এই পাস্তুরিত দুধ।
  • আমরা জানি, দুধে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস উপস্থিত থাকে। এই উপাদানগুলো আমাদের হাড় এবং দাত মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • পাস্তুরিত দুধ খেলে আমাদের দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়ে থাকে।
  • পাস্তুরিত দুধে অনেক বেশি পরিমানে প্রোটিন থাকে। যা আমাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার ফলে আমাদের পেশির গঠন মজবুত হয়ে থাকে।
  • পাস্তুরিত দুধে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন বি-১২ থাকে। যা আমাদের মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • আমাদের ত্বক ভালো রাখতে পাস্তুরিত দুধের ভূমিকা অপরিসীম।

পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার নিয়ম

পূর্বে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়? এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আমরা যে খাবারই খাই না কেনো তা সঠিক নিয়ম অনুসরন করে খেতে হয়। 

পাস্তুরিত দুধ আমাদের শরীরে জন্য অনেক বেশি উপকারী। পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। পাস্তুরিত দুধ সেবনের পূর্বে প্রথমে ফ্রিজে রাখা প্রয়োজন। এরপর যখন ভালোমত ঠান্ডা হয়ে যাবে তারপর প্যাকেট খুলে খাওয়া উচিত।

পাস্তুরিত দুধ খালি পেটে খাবারের সাথে খাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি ফলের স্মুদি বানিয়ে বা রুটি অথবা পাউরুটির সাথে মিশিয়ে এই দুধ খেতে পারেন। এতে করে কোনো ধরনের ঝুকি থাকবে না। 

ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই দুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। পাস্তুরিত দুধ শিশুকে না খেতে দেওয়াই উত্তম। কারন এক্ষেত্রে শিশুদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি একান্ত খাওয়াতে হয় তাহলে প্রথমে গরম করে এরপর ঠান্ডা করে তারপর খাওয়ানো উত্তম। 

স্বাদ বৃদ্ধি  করার জন্য আপনি পাস্তুরিত দুধের সাথে মধু, চিনি বা অন্য মিষ্টি জাতীয় যেকোনো কিছু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে দুধের স্বাদ অনেকটা বেড়ে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন দুধে চিনির পরিমান বেশি  না হয়ে যায়। 

তা না হলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দেয়। নিম্নে পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
 
  • পাস্তুরিত দুধ সবসময় শীতল অবস্থায় সংরক্ষন করা উচিত। সবথেকে ভালো হয় যদি আপনি ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পাস্তুরিত দুধ সংরক্ষন করেন। এইভাবে সংরক্ষন করলে দুধ ভালো থাকে এবং সহজে নষ্ট হয় না।
  • পাস্তুরিত দুধের প্যাকেট খুলে ফেলার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে খেয়ে নেয়া উচিত। কারন বেশিদিন রাখলে এতে জীবানু এবং ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় এবং দুধ নষ্ট হয়ে যায়।
  • পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার পূর্বে ভালোভাবে এর প্যাকেট ঝাকিয়ে নেওয়া উচিত। এতে করে দুধে থাকা উপাদান ভালোভাবে মিশ্রিত হতে পারে।
  • পাস্তুরিত দুধের প্যাকেট খোলার পরে গরম করে পান করা উত্তম। এতে করে দুধের মধ্যে থাকা জীবানু দূর হয়ে যায়।
  • পাস্তুরিত দুধের প্যাকেটে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে সময়ের মধ্যে এই দুধ খেয়ে নেওয়া উচিত।

দুধের পাস্তুরাইজেশন কাকে বলে

পূর্বে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?, এই দুধের উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো দুধের পাস্তুরাইজেশন কাকে বলে তা সম্পর্কে। 

দুধের পাস্তুরাইজেশন হলো এমন এক ধরনের প্রক্রিয়া যেখানে দুধকে প্রথমে গরম করা হয় এবং পরবর্তীতে ঠান্ডা করার মাধ্যমে দুধের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং জীবানু দূর করা হয়। দুধের এই প্রক্রিয়াকরনকে দুধের পাস্তুরাইজেশন বলা হয়। 

যেকোনো প্রানীর দুধ প্রথমে একটি জায়গায় নিয়ে তারপর তা চুলায় দিয়ে গরম করতে হয়। এরপর নির্দিষ্ট একটি তাপমাত্রায় গিয়ে একসময় তাপ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর সেই গরম দুধ ফ্রিজে ৪-৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঠান্ডা করার প্রয়োজন পড়ে। 

এরপর সেই দুধ খাওয়ার উপযোগী হয়। পাস্তুরিত দুধ আপনি বিভিন্ন খাবারের সাথে খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে অথবা যেকোনো সময় এটি খাওয়া যেতে পারে। পাস্তুরিত দুধের সাথে চিনি, মধু ইত্যাদি মিষ্টি জাতীয় জিনিস মিশ্রিত করেও খাওয়া যেতে পারে। 

দুধ পাস্তুরাইজেশন এর প্রধান কারন হলো দুধে থাকা বিভিন্ন ধরনের খারাপ এবং ক্ষতিকর উপাদান থেকে দুধকে রক্ষা করা। দুধ গরম করার মাধ্যমে এই ক্ষতিকর পদার্থ চলে যায় এবং দুধ খাওয়ার উপযোগী হয়ে যায়। 

পাস্তুরিত দুধে কোনো প্রকার ক্ষতিকর পদার্থ না থাকার কারনে এই দুধ খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এই দুধে অনেক বেশি পরিমানে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, প্রোটিন এবং অন্যান্য উপাদান থাকে। 

এই ধরনের উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আমাদের শরীরে থাকা বিভিন্ন হাড় মজবুত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। তাই পানি নির্দ্বিধায় এই দুধ খেতে পারেন। 

এই দুধ আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কারন এতে কোনো ধরনের জীবানু থাকে না পাস্তুরাইজেশন করার ফলে দুধ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়।

পাস্তুরাইজেশন কিভাবে করা হয়

পূর্বে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?, এই দুধের উপকারিতা, পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার নিয়ম এবং পাস্তুরাইজেশন কাকে বলে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো পাস্তুরাইজেশন কোন পদ্ধতির মাধ্যমে করা হয় তা সম্পর্কে। নিম্নে পাস্তুরাইজেশন পদ্ধতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
 
  • প্রথমে দুধকে ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ মিনিট বা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১৫ সেকেন্ডের জন্য রেখে দিতে হয়। এতে দুধের মধ্যে থাকা জীবানু এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়।
  • পরে গরম দুধকে ঠান্ডা করার জন্য ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয়। যেন কোনো ধরনের জীবানু বা ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে না পারে।
আশা করি দুধ কিভাবে পাস্তুরাইজ করা হয় তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন। যেকোনো প্রানীর দুধ প্রথমে সংগ্রহ করা হয়। তারপর এই দুধ নির্দিষ্ট একটি তাপমাত্রায় গরম করা হয়। যাতে করে দুধ থেকে ক্ষতিকর পদার্থগুলো দূর হয়ে যায়। 

এরপর দুধকে ঠান্ডা করার জন্য ফ্রিজে রাখা হয়। ফ্রিজের তাপমাত্রা এই সময় ৩-৫ ডিগ্রি রাখা হয়। যাতে করে দুধে থাকা অবশিষ্ট ক্ষতিকর পদার্থ নষ্ট হয়ে যায়। এরপর এই দুধ খাওয়ার জন্য উপযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

দুধ পাস্তুরাইজেশন করার পরও কক্ষ তাপমাত্রায় রাখলে নষ্ট হয়ে যায় কেন

পূর্বে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?, এটি খাওয়ার নিয়ম, কিভাবে এই দুধ প্রস্তুত করা হয় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো কক্ষ তাপমাত্রায় রাখার পরেও কিভাবে পাস্তুরিত দুধ নষ্ট হয়ে যায় তা সম্পর্কে। 

আমরা পূর্বে জেনেছি পাস্তুরাইজেশন এর ফলে দুধে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং জীবানু ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু কিছু অনুজীব পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। পরবর্তীতে এই অনুজীব নতুন জীবানু এবং ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দিয়ে থাকে। 

আমরা জানি দুধে এক ধরনের উপাদান থাকে যার নাম হলো ল্যাকটোজ। এই ল্যাকটোজ হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক শর্করা। যা দুধ এবং দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবারে পাওয়া যায়। 

ল্যাকটোজ সাধারন কক্ষ তাপমাত্রায় নষ্ট হয় না। তবে কিছু কিছু কারন এই পাস্তুরিত দুধ নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় দুধে মাইক্রোবিয়াল সংক্রমন দেখা দেয়। যার কারনে দুধে থাকা ল্যাকটোজের স্বাদ টক হয়ে যায় এবং দুধ নষ্ট হয়ে যায়। 

অনেক সময় আমরা দুধ উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশে সংরক্ষন করে থাকি। এই ধরনের পরিবেশে দুধ সংরক্ষন করলে দুধে থাকা ল্যাকটোজ নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় দুধের মধ্যে এনজাইমেটিক ক্রিয়ার কারনেও দুধ নষ্ট হয়ে যায়। 

দুধে অনেক সময় বাইরে থেকে অক্সিজেন প্রবেশ করে। দুধে থাকা প্রোটিন এবং চর্বি অক্সিডেশন এর কারনে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ এই ধরনের পাস্তুরিত দুধ সংরক্ষন করলেও দুধ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দুধে থাকা ল্যাকটোজ ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে দুধ খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই বলা যায় দুধ পাস্তুরাইজেশন করার পরেও কক্ষ তাপমাত্রায় রেখে দিলে দুধ নষ্ট হয়ে যায়।

লেখকের মন্তব্য - পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?

আজকের আর্টিকেলে আমরা পাস্তুরিত দুধ কি সরাসরি খাওয়া যায়?, এই দুধ খাওয়ার নিয়ম, পাস্তুরিত দুধ তৈরি করার নিয়ম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। 

প্রতিনিয়ত এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইট ফলোও করুন। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমুহ বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url